আত্মদর্শন। সাইদুর রহমান মানিক |
আপাদমস্তক উলঙ্গ ব্যক্তি যখন অপরের জামার পাছারভাগের কিয়দাংশ ছিড়া দেখে আশ্চর্যবোধ করে তখন আপনি তাকে কি বলবেন? পাবনা থেকে পালিয়ে আসা কোন মানসিক রুগী?
অথচ আমি/আপনি/সবাই এই আচরণ থেকে পুরোপুরি মুক্ত নই।
ভাবছেন আপনি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ। উলঙ্গপনা আর বোরকাবৃত্তির পার্থক্য বুঝেন। না আমি বাহ্যিক কোন উলঙ্গপনার কথা বলিনি। আমি বলছি চারিত্রিক উলঙ্গপনার কথা।
চারিত্রিক দিক দিয়ে আমরা কেউই আপাদমস্তক বোরকাবৃত্ত নই। কম বেশি আমরা সবাই ন্যাংটা।
কিন্তু সমস্যা হল, আমরা সবাই অপরের ন্যাংটা অঙ্গ দেখে সমালোচনা করি। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, ঠাট্টা -মশকারা করি। কিন্তু নিজে কতোটা উলঙ্গ তা অনুধাবন করিনা বা করতে পারিনা। কারন আমরা নিজেকে চিনিনা।
পরচর্চা করতে করতে জীবনে এতটাই আমরা ব্যস্ত হয়ে পরি যে নিজেকেই চেনার সময় হয়ে ওঠেনা। অবশ্য 'নিজেকে চেনা' পৃথিবীর অন্যতম জটিল কাজের একটি। যা সবাই চাইলেও পারেনা। উপযুক্ত বিবেকবুদ্ধি ও আত্নদর্শনের পরিবেশ লাগে। আপনি ভীড়ের মধ্যে নিজেকে চিনতে পারবেন না। নিজেকে সময় দিতে হয়। নিজেকে চেনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে একাকীত্ব। নিরবে নিভৃত্যে নিজের সাথে বুঝাপড়া করতে হয়। বুঝতে হয়, আমাদের চিন্তাধারা কিভাবে বেড়ে ওঠে। আত্মদর্শন কেবল তার দ্বারাই সম্ভব যে মনস্তত্ত্ব বুঝে।
ধরেন, আপনি সারাদিন পরচর্চা, পরনিন্দা করেন। এটাকে আপনি গীবত মানতে নারাজ। কিন্তু সেই আপনি আপনার সম্পর্কে কারো মুখে সমালোচনা শুনলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
কারন, আপনি এখনো নিজেকে চিনতে পারেন নি। যে নিজেকে চিনতে পেরেছে, সে নিজের হিংসার ব্যাপারে বুঝতে সক্ষম।
আমি ইহা বলি না , যে নিজেকে চিনতে পেরেছে তার হিংসে-ঘৃণা-ক্ষোভ-ক্রোধ নেই।
অবশ্যই আছে।
তবে পার্থক্য হলো, যে যতো বেশি আত্নদর্শনের অধিকারী সে নিজেকে ন্যাংটা বুঝতেও ততো বেশি সক্ষম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন