![]() |
বিশ্বায়নের যুগে বাস করেও আমাদের হুজুররা কতই না ব্যাকডেটেড এক সম্প্রদায়। এরা নীল আর্মস্ট্রং এর কাল্পনিক ইসলাম গ্রহনের কাহিনী মুখস্ত করে নিজেকে বিরাট লেভেলের বিজ্ঞানী মনে করে। কোনরকমে এরিস্টেটলের নামটা জানে, তাতেই নিজেকে দার্শনিক বোদ্ধা হিসেবে আবিষ্কার করে ফেলে। মধ্যযুগীয় তর্কশাস্ত্রের (ইলমে মানতিক) একদম বেসিক কিছু বিদ্যা শিখেই নিজেদের তর্কশাস্ত্রের অপরাজেয় পন্ডিত ভাবা শুরু করে।
আমি নিজেও ক্বওমী পড়ুয়া একজন আলেম। আলেমদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে আমি চাই, মাদ্রাসার শিক্ষায় একটা বিপ্লব আসুক। যেই শিক্ষা অর্জন করলে কমপক্ষে সমাজে গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার/মোটামুটি রিউমার স্ক্যান করার যোগ্যতা তৈরী হবে।
আপনারা শুধু নিজ দেশে খেলাফত কায়েমের নেশায় বিভোর কেন? আপনারা ওয়ার্লড অর্ডারের ভূমিকায় যাবার স্বপ্ন লালন করেন। কিন্তু এর জন্য আপনাদেরকে, ইতিহাস, অর্থনীতি, সাইকোলজি, সামরিক বিদ্যা, প্রযুক্তি, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি সব বিদ্যায় গবেষনা ও আবিষ্কারে নিজেদের নেতৃত্বযোগ্য পজিশনে নিতে হবে। তারপর আসে গ্লোবাল পলিটিক্সের প্যাটার্ন বুঝে বাতিলের মোকাবেলা এবং নিজেকে শক্তিশালী করা। নতুবা বিপ্লবের নামে বরাবরই আপনারা অজ্ঞাতসারে বাতিলের ব্যবহৃত শক্তি। আপনাদের ঘোষিত বাতিলই তার প্রয়োজনে উস্কানী দিয়ে আপনাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে।
এদেশের সচেতন আলেমরা জেনারেল শিক্ষার দূরাবস্থা নিয়ে চিন্তিত। অথচ, নিজেদের শিক্ষার কোন স্ট্যান্ডার্ড নাই। যে কেউ যে কোন ক্লাসে ভর্তি হতে পারে। সার্টিফিকেটের কোন ভ্যালু নাই। শুধু কোরআন আর হাদীস'ই যে শিখে তারও কোন স্ট্যান্ডার্ড নাই। যে কেউ শুধু ডেস্ক পাশ করে দাওরার ক্লাসে হাদীসের দরসে বসে যেতে পারলেই ডিগ্রিধারী আলিম হয়ে যায়। আপনাদের এই অথর্ব সিস্টেম কি আদৌ আলেম তৈরী করে? কিছু হয়তো করে। কিন্তু মেজরিটিই না বুঝে ধর্ম, আর না বুঝে দুনিয়া।
পঙ্গপালের মত প্রডাকশনের কারনে শুধু মসজিদ মাদ্রাসা আর হাদিয়া নির্ভর এই পরজীবী অকর্মাদের বেতনের কোন ভ্যালু তৈরী হয় না। অকর্মা এইজন্য বললাম, হুজুরদের মেজরিটি অংশেরই কোন কর্মমুখী প্র্যাক্টিক্যাল বা জ্ঞানগত নলেজ নাই। এটাকে মনস্তাত্বিকভাবে হারাম জ্ঞান করে। দেশের অর্থনিতীতে আমাদের কোন অবদান তো নাই-ই, আবার একেকটা মাদ্রাসা অকর্মা তৈরীর ফ্যাক্টরী। দেশের শিক্ষিত জনগনের একটা বিশাল অংশকে শুধু মানুষের দান-খয়রাত নির্ভরশীল অকর্মা বানানো এটা দেশ ও জাতির জন্য আত্মঘাতী।
২০২৪ এর স্বাধীনতা পরবর্তী সব সেক্টরের সংস্কারের এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমি ভীষনভাবে চাই, মাদ্রাসা শিক্ষারও সংস্কার হোক। যেখান থেকে গুজবের ফ্যাক্টরী বের না হয়ে, ইবনে সিনা, জাবির ইবনে হাইয়ান, আল রাজি, মুসা আল খোওয়ারিজম, ওমর খৈয়ামের মত লোকেরা তৈরী হবে। কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটি তৈরী করুন। সমাজের বুঝা না হয়ে নিজেদেরকে জাতীয় সম্পদ বানানোর মত শিক্ষা ব্যবস্থা ও পলিসি তৈরী করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন