মানুষ আমার সমালোচনা করুক। সাইদুর রহমান মানিক |
আমি চাই, মানুষ আমার ভুলের সমালোচনা করুক। ভুলকে ভুল বলুক এবং ধরুক। কেউই শতভাগ শুদ্ধ নয়। কর্মে হোক অথবা চিন্তায়। মানুষ মতের বিরুদ্ধে কিছু পেলেই মানতে চায়না। ভেঙ্গে যায় নতুবা ক্ষেপে যায়। মানসিকভাবে অস্থির হয়ে যায়।
এর মানে দাঁড়ায়, আমিই ঠিক। আমার চিন্তাই সঠিক।
মুখে আমরা স্বীকার করি 'কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়'। অথচ, তর্কের বেলায় বুঝাই 'আমি ছাড়া কেউই শুদ্ধ নয়'। আমার পক্ষে যেই বললো সেই সু-চিন্তক, গণমানুষ বিপক্ষে গেলেও সবাই কু-চিন্তক। পক্ষের সু-চিন্তক ব্যক্তিটি কোন প্রসঙ্গে মতবিরুদ্ধে গেলেই গোঁয়ারা টাইপের।
সময় বয়ে চলছে। ছোট থেকে বড়ো হচ্ছি। সময় বয়ে চলার সাথে হচ্ছে চিন্তার পরিবর্তন। নতুন অনেক কিছুই শিখছি,অভিজ্ঞাত হচ্ছি। অতীতের অনেক ভুল বুঝতে পারছি,সংশোধিত হচ্ছি। বর্তমানে বুঝতে পারছি অতীতে অনেক ভুলের উপর থেকেও অনেক তর্ক করেছি সেসময়কার অশুদ্ধ চিন্তা বা অভিজ্ঞতাহীনতার কারণে।
আমাদের জ্ঞান যতই বৃদ্ধি পাক তা সীমাবদ্ধ। 'জ্ঞানের সাগর' কারো ট্যাগ লেগে গেলেও বাস্তবতা হলো তার জ্ঞান সমুদ্রের এক ফোঁটা জলের সমতুল্যও নয়। বা এক ফোঁটা জলের কোন এক ক্ষুদ্র অণুকণা। যার যার সীমাবদ্ধতা থেকে ঊর্ধ্বতন জ্ঞানীদের আমরা 'বাহরুল উলুম' বা 'বিদ্যাসাগর' বলি।
মুল কথা হলো, সবার জ্ঞানই সীমাবদ্ধ। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতায় আমরা নিজের যেই চিন্তাধারাকে এখন সঠিক বিবেচনা করছি, ভবিষ্যতে ইহাকেই আবার ভুল প্রমানে মরিয়া হয়েও উঠতে পারি। এক সময় যাদের আমরা রুল মডেল ভাবি পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধেই আমরা মুখর হয়ে উঠি। অর্থাৎ আমাদের চিন্তা-বিবেচনা স্থির নয়।
তাই, যেভাবে আমরা মুখে বলি কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তা চিন্তায় বা আচরণেও প্রমান করতে হবে। নিজ ভুল স্বীকার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কেহ নিজের বা দলের মতবিরুদ্ধ কিছু বললেই আমাদের মাইন্ডিং হিপোক্রেসি শুরু হয়ে যায়। এমন মানসিকতা পরিহার করতে হবে। কারো ভুল ধরা বা সমালোচনা থেকে আমার কিছু শেখার আছে কিনা ভাবতে হবে। সমালোচনাকে অভিজ্ঞতার হাতিয়ার বানাতে হবে।
তবে আমরা ভুল ধরার মধ্যেও ভুল করি। সবাই সমালোচনা করতেও জানেনা। ভুলকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনা। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে। নিজেকে জ্ঞানী ভেবে ভাব নেয়। গঠনমোলক সমালোচনা করতে পারেনা। তাই সমালোচক এবং সমালোচনাকারীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। মনোমালিন্যতা সৃষ্টি হয়। কেউই শিখতে পারেনা এবং শিখাতে পারেনা। কেউই সব বিষয়ে শুদ্ধ নয়। ইহাই মানুষের স্বাভাবিকতা। ইহাকে অন্তরে ধারণ করতে হবে। নিজেকে জ্ঞানী প্রচারের জন্য নয়, অপরের সংশোধনের জন্য সমালোচনা করতে হবে।
তাই আসুন, নিজেকে সীমাবদ্ধজ্ঞান করি। সমালোচনা থেকে শিখি, এবং গঠনমোলক সমালোচনা করি।
nice post
উত্তরমুছুনThanks for support.
মুছুনOnek Balo laglo
উত্তরমুছুনThanks. ❤️
মুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন