 |
ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় ২০২১ |
আপনি ত্বক ফর্সা করা ঘরোয়া উপায় খুজছেন? তাহলে এই টিউটিরিয়ালটি আপনার জন্য। এই টিউটোরিয়ালে আমরা ত্বক ফর্সা করার উপায় নিয়ে দারূন কিছু টিপস দেয়ার চেষ্টা করবো।
আমাদের দেশে বয়স ৩০ পার হওয়ার আগেই ত্বকে এক ধরনের বার্ধক্যের ছাপ চলে আসে। ইদানীং আবহাওয়ার যে বিরূপতা দেখা যাচ্ছে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার পেছনে এই কারণও হতে পারে। আবার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত কেমিক্যাল সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারের কারণেও ত্বক তার স্বাভাবিক সজীবতা হারায় খুব সহজেই। আমাদের যত্নের মাধ্যমেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বয়স ত্রিশ পার হলেও ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখা যায় খুব সহজেই। কীভাবে, জানতে চান?
আজকে জেনে নিন বয়স ত্রিশের পরও ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখার দারুণ কিছু কৌশলঃ
[১] ত্বক নিয়মিত স্ক্রাব করার মাধ্যমে ত্বকের মরা কোষ দূর হয়, ত্বকের অতিরিক্ত তেল ময়লা দূর হয়, এতে করে ত্বকের হারানো উজ্জলতা ও সজীবতা ফিরে আসে।
[২] প্রতিদিন রাতে ঘুমুতে যাওয়ার পূর্বে ত্বক খুব ভালো করে পরিস্কার করে নেয়া অনেক বেশি জরুরি। এরপর পুরো ত্বকে ময়েসচারাইজার লাগিয়ে ঘুমুতে যাবেন। এতে করে ত্বক হাইড্রেট থাকবে এবং খুব সহজে বয়সের ছাপ পড়বে না।
[৩] ত্বকের রুক্ষতা, শুষ্কতা, সজীবতা হারানো, বয়সের ছাপ পড়া, চামড়া ঝুলে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ত্বক পানি শূন্য হয়ে যাওয়া। তাই ত্বক যেনও পানিশূন্য না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। সব সময় পানির বোতল সাথে রাখবেন। পরিমান মত পানি পান করবেন এবং নিয়মিত পানি পান করবেন।
[৪] ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি হতে রক্ষা করুন। কারণ ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে সূর্যের রশ্মি অন্যতম। অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। বাইরে বের হলে ক্যাপ, স্কার্ফ, ছাতা ইত্যাদি সাথে রাখবেন।
[৫] দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ইত্যাদি যতোটা সম্ভব দূরে রাখবেন। কারণ এই নেতিবাচক জিনিসগুলোর কারণে আপনার ত্বকেরও মারাক ক্ষতি হচ্ছে। ত্বকে রিঙ্কেল পড়ছে। তাই সতর্ক থাকুন নিজেই।
[৬] ত্বক ম্যাসেজ করুন মাসে অন্তত ২-৩ বার। এসেন্সিয়াল অয়েল বা প্রাকৃতিক কোনও তেল দিয়ে ম্যাসেজ করলে ত্বক ভেতর থেকে সুন্দর হয় এবং বয়সের ছাপ অনেক দেরিতে আসে।
[৭] খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। এমন কোনও খাবার খাবেন না যার কারণে ত্বকের ক্ষতি হয় এবং ত্বকে অল্পতেই বয়সের ছাপ পরে যায়। বিশেষ করে ধূমপান ও মদ্যপান থেকে একেবারেই দূরে থাকবেন।
ত্বক উজ্জ্বল করার উপায়।
আমাদের ত্বক নানা কারণে উজ্জ্বলতা হারায়। এই যে আপনি যেমন ইচ্ছে তেমন খাওয়া দাওয়া করছেন। মোটেই ব্যায়াম করেন না বরং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেদার আড্ডা মেরে সময় কাটিয়েছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়েব সিরিজ় দেখেছেন বা দিনের বেলায় পাড়ার প্যান্ডেলে বসে গুলতানি করেছেন তার সব কিছুর প্রভাবই ত্বকের উপর পড়েছে। ফলে আপনার স্বাভাবিক রং হারিয়ে যায়।
সঙ্গে বাতাসের দূষণের প্রভাবও আছে!
বাজারচলতি ক্রিম বা মহার্ঘ্য ফেশিয়াল ট্রাই করে দেখতেই পারেন, তবে তার চেয়ে কোনও অংশেই পিছিয়ে থাকবে না পরিচিত ঘরোয়া সমাধানগুলি। ঘরোয়া টেকনিকে তো আর ক্ষতিকারক রায়াসনিক থাকে না, তা কোমলভাবে আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। তবে এগুলি ট্রাই করার পাশাপাশি প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়ার ব্যাপারে যত্নশীল হয়ে উঠতে হবে, খাদ্যতালিকায় যেন প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলের অভাব না থাকে তা দেখতে হবে। অতিরিক্ত তেল-মশলা থেকে আপনাকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে যথেষ্ট বিশ্রামও প্রয়োজন। পাশাপাশি চেষ্টা করুন সারাক্ষণ অ্যাকটিভ থাকার। সকালবেলা আধ ঘণ্টা ব্যায়াম করার পর যদি সারাক্ষণ একটি চেয়ারে ঠায় বসে থাকেন, তাহলে আপনার ত্বক মুষড়ে থাকবেই। সারাদিন হাটাচলা ও অফিসে নিজের জন্য চা বা জলখাবার নিজে আনার চেষ্টা করুন।
এর পাশাপাশি তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিন। প্রথমটি এক্সফোলিয়েশন। নিয়ম করে ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর – তাতে ত্বকের উপর মরা কোষের পরত জমতে পারবে না ও ত্বক ঝলমল করবে। দ্বিতীয়ত, অতি অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন দিনের বেলায়। যাঁরা অফিসে কাচের জানলার পাশে বসেন, তাঁরাও দিনের আলো থাকাকালীন বেশ কয়েকবার সানস্ক্রিন লাগান। রোদের প্রভাবে যেন আপনার স্বাভাবিক জেল্লা না হারায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনারই। সেই সঙ্গে প্রচুর জল খেতে হবে। ত্বক আর্দ্র থাকলে চট করে বলিরেখা পড়বে না, থাকবে টানটান। ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমতে আরম্ভ করলেই তার জেল্লা হারাতে আরম্ভ করে।
ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়।
শসাঃ ত্বকের যে কোনও প্রদাহ কমাতে শসার ব্যবহার বহুল প্রচলিত। সেই সঙ্গে চোখের কোলের কালি তাড়াতেও শসার রস কার্যকর বলে মনে হয় অনেকের। শসার রস ব্যবহার করুন প্যাকে, সরাসরিও লাগাতে পারেন।
পাতিলেবুর রসঃ লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সরাসরি লেবুর রস ত্বকে লাগানো অনুচিত। এর প্রভাবে ত্বক সাঙ্ঘাতিক সেনসিটিভ হয়ে পড়ে, তীব্র জ্বালাভাবও টের পেতে পারেন। তাই সরাসরি লেবুর রস না লাগিয়ে তা আপনার ফেস প্যাকের অন্যতম অঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করুন। ফুল ফ্যাট দুধ, বেসন বা আটা আর লেবুর রসের প্যাক সাধারণত সব ধরনের ত্বকের মধ্যে ভালো কাজ করে। তবে লেবুর রস ইউজ করার পরে অবশ্যই ভালো কোনও ময়েশ্চরাইজার লাগান। না হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে।
দুধ, দই আর মধুঃ দুধ আর দইয়ে উপস্থিত এনজ়াইম আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িতে তুলতে দারুণ কার্যকর। আর মধু কাজ করে প্রাকৃতিক ময়েশ্চরাইজ়ার হিসেবে। এই দু’টি মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন এবং বিশ মিনিট পরে ধুয়ে নিবেন। এবং রাতে লাগাবেন।
টোম্যাটোঃ টোম্যাটোর লাইকোপিন ত্বকে বয়সের আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে দারুণ কার্যকর। তা ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট বাড়িয়ে তোলে ত্বকের উজ্জ্বলতাও। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফেস প্যাকে টোম্যাটো ব্যবহার করতে পারেন, সেই সঙ্গে খানিকটা ওটমিল মিশিয়ে নিন – ত্বক ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে উঠবে। আধা ঘণ্টা পর প্যাকটা ধুয়ে নিয়ে ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন। অতি অবশ্যই তার পর সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।
চন্দনঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে চন্দনের কোনও তুলনা নেই! বলা হয়, চন্দনে উপস্থিত টাইরোসিনেস মেলানিনের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। চন্দনের সঙ্গে আমন্ড পাউডার আর দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করুন। ত্বক একেবারে ঝলমলিয়ে উঠবে! সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যায়। তবে যাঁরা প্রথমবার চন্দন ব্যবহার করছেন, তাঁরা অবশ্যই একবার প্যাচ টেস্ট করে নিন। অনেকের চন্দনে অ্যালার্জি হয়।
হলুদঃ কাঁচা হলুদের নিয়মিত ব্যবহার আপনার ত্বককে সুস্থ রাখে ও ধীরে ধীরে উজ্জ্বল করে তোলে। আপনার ফেস প্যাকে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন!
অ্যালো ভেরাঃ অ্যালো ভেরা পাতা চিরে মাঝের থেকে শাঁসটা বের করে নিন। তার মধ্যে হলুদ আর লেবুর রস দিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এক দিন অন্তর অন্তর ব্যবহার করতে পারেন এই প্যাক। ৩০ মিনিট পর মুখ থেকে তুলে ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন